আপনি যদি ভারতীয় নাগরিক হন এবং আপনার যদি কন্যা সন্তান থাকে তাহলে সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা আপনার জন্য একটি সুখকর প্রকল্প। “বেটি পড়াও , বেটি বাঁচাও” অভিযানের অংশ হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রকল্পটি ২০১৫ সালের ২২শে জানুয়ারী চালু করেন। কন্যা সন্তান যাতে সমাজের মূল স্রোত থেকে কোনোভাবে পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য মেয়ের জন্মের পর থেকে তার পিতামাতা বা অভিভাবক যাতে একটু একটু করে সঞ্চয় করে উৎসাহিত হয় তাই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এই অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার যোগ্যতা :

১) অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
২) কন্যাসন্তানের পিতামাতা বা অভিভাবক এটি খুলতে পারেন।
৩) কন্যাসন্তানের জন্মের পর থেকে দশ বছর বয়স পর্যন্ত সময়সীমার মধ্যে খাতাটি খুলতে হবে। যদিও বয়সের ক্ষেত্রে একবছরের ছাড়ের অনুমতি আছে।
৪) একটি কন্যা সন্তানের জন্য একটিমাত্র খাতা খোলা যাবে।
৫) একজন পিতামাতা সর্বাধিক দুটি পর্যন্ত খাতা খুলতে পারবেন দুটি কন্যার জন্য। তবে যমজ সন্তানের ক্ষেত্রে তিনটি পর্যন্ত খাতা খোলার অনুমতি আছে।
৬) কন্যাসন্তান ১৮ বছর বয়স অতিক্রম করলে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিয়ে নিজেই তার account পরিচালনা করতে পারে।

সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার উদ্দেশ্য:

১) কন্যা সন্তানের উচ্চশিক্ষা এবং বিবাহের সময় সাহায্য এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য।

২) কন্যা সন্তানকে যাতে পিতামাতা বোঝা না মনে করে এবং তার পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারে সেজন্যই এই প্রকল্প।

৩) কন্যার বিবাহের সময় একসঙ্গে বেশি পরিমান টাকা জোগাড় করতে বেশিরভাগ বাবা মা অসুবিধা সম্মুখীন হন। এই সম্যসা কিছুটা রেহাই পেতে সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার টাকা কাজে আসে।

৪) পিতা মাতা যাতে বেশি পরিমান সুধের হার পান তাই পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের থেকেও ০.৫% বেশি হরে সুদ দেওয়া হয়। বর্তমানে সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনায় সুদেরহার বাৎসরিক ৭.৬ শতাংশ।

৫) ইনকাম ট্যাক্স আইনের অন্তর্গত ৮০C বিভাগের অধীনে এই প্রকল্পটি পড়ে। তাই বাৎসরিক ১৫০০০০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে ট্যাক্স এর ছাড় পাওয়া যায়। ২০১৫ সালে অর্থ মন্ত্রী অরুন জেটলি ঘোষণা করেন যে ম্যাচুরিটি এর সময় যে পরিমান টাকা পাওয়া যাবেনা।

Maturity:

১) একাউন্ট খেলার তারিখ থেকে ২১ বছর আপনার টাকাটি mature হয়ে থাকে তাই যত তাড়াতাড়ি সম্বব একাউন্ট খোলা উচিত।

২) ২১ বছরে maturity হলেও একাউন্ট হোল্ডার কে শুধুমাত্র ১৫ বছর টাকা জমা করতে হবে। বাকি ৬ বছর সঞ্চয় হওয়া টাকার উপর প্রাপ্ত লভ্যাংশ জমাহতে থাকবে।

৩)সন্তানের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সহায়তার জন্য সন্তানের ১৮ বছর পুরোনো হলে ৫০% অর্থ তুলে নেওয়ার অনুমুতি আছে তবে সেক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমান পেস করতে হবে। বাকি ৫০% maturity এর পর পথ যাবে।

৪) এছাড়াও কন্যাসন্তান দুরারোগ্য কোনো ব্যাধির স্বীকার হলে বা বিবাহ যোগ্য হলে উপযুক্ত প্রমান দিয়ে ৫০% টাকা ম্যাচুরিটি এর আগে তোলা যাবে।

৫) Maturity এর পর সঞ্চিত অর্থের উপর কোনো সুদ পাওয়া যায়না।

অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার:

১) একাউন্ট টি যেকোনো পোস্ট অফিস থেকে অন্য পোস্ট অফিস এ বা যেকোন ব্যাঙ্ক থেকে অন্য ব্যাংকে হস্তান্তর বা ট্রান্সফার করা যায়। সে ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে বাসস্থান পরিবর্তনের প্রমান পেস করতে হয়।

২) একাউন্ট হস্তান্তর এর ক্ষেত্রে কোনোরকম ফী দিতে হয়না।

৩)বাসস্থান পরিবর্তন ছাড়া অন্য কোনো কারণে একাউন্ট ট্রান্সফার করলে ১০০ টাকা ফী ধার্য করা হয়।

সময় সীমার আগে খাতা বন্ধ করার কিছু নিয়ম :

১) একাউন্ট হোল্ডার এর অসময়ে মৃত্যু হলে।
২) একাউন্ট চালাতে অসমর্থ হলে
৩) কোন মেডিকেল ইমার্জেন্সি থাকলে।
৪) কন্যাসন্তান যদি ভারতের নাগরিকত্ব হারায় সে ক্ষেত্রে খাতা বন্ধ হয়ে যাবে ।

সচরাচর জিজ্ঞাস্য:


সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্ট কে খুলতে পারেন?

কোনো মেয়ে সন্তানের আইনগত অভিভাবক বা পিতামাতা তাদের মেয়ে সন্তানের পক্ষে সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।


সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার যোগ্যতা কী?

সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্টের যোগ্যতার মধ্যে রয়েছে: শুধুমাত্র মেয়ে শিশুরাই সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্ট রাখার যোগ্য। একটি মেয়ে শিশুর সর্বোচ্চ বয়স ১০ বছরের বেশি হওয়া চলবেনা।

একজনের কি 2টি সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে?

আপনি মেয়ে সন্তানের নামে শুধুমাত্র একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে এবং পরিচালনা করতে পারেন। আপনি একটি মেয়ের জন্য দুটি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না।

সুকন্যা সমৃদ্ধি প্রকল্পের সুবিধা কী?

সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্ট অন্যান্য সেভিংস প্ল্যানের তুলনায় উচ্চ হারে সুদ প্রদান করে যা কন্যা সন্তানের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করে।