নেটফ্লিক্স ” এ বিভিন্ন সিরিজ দেখেন তো সবাই, কিন্তু এর উদ্বর্তন এর ইতিহাস কি জানা আছে? উত্তর তা যদি ” না ” হয় তাহলে আজ এর কিছু ইতিহাস জানা যাক –
নেটফ্লিক্স, যা একটি মার্কিন কোম্পানি, যার শুরু ১৯৯৭ সালে রীড হাস্টিংস এবং মার্চ রানডলফ এর দ্বারা। যা বর্তমানে ৩৩.৯৭৫ বিলিয়ন ডলার কোম্পানি।
১৯৯৭ সালে আমেরিকায় “ব্লক বাস্টার ভিডিও” নামক প্রতিষ্ঠান ছিল, যেখান থেকে মার্কিন নেটিজেন্স, তাদের পছন্দ মতন সিনেমা ভিডিও রেন্ট এ নিতে পারতো। তখনকার আমিরিকান দের মধ্যে প্রচলন ছিল, উইকেন্ড মানে শুক্রবার রাত্রে ডিভিডি নেবে, তারপর সারা ছুটির দিন তা মজা করে, সোমবার তা ফেরত দিবে।
কিন্তু এর একটা বড় অসুবিধা ছিল, যদি কেউ সময় এর মধ্যে ডিভিডি ক্যাস্যাক্ট ফেরত দিতে পারতো না তবে তার একটা মোটা অংকের “লেট ফী” ধার্য্য করা হতো। আর সব থেকে মজার কথা হলো এই “লেট ফী ” এর মাধ্যমেই এর এই কোম্পানি সব থেকে বেশি ইনকাম করতো । আর এই “লেট ফী” এর জন্যই তৈরী হয়েছিল আজকের “নেটফ্লিক্স” ।
নেটফ্লিক্স এর অন্যতম খোঁজি রীড হাস্টিংস এই “ব্লক বাস্টার ভিডিও” এর থেকে ডিভিডি নিতো। কিন্তু একসময় এতো বেশি রেন্ট ফী ধার্য্য করা হলো যে, তাতে সে রীতিমতো বিরক্ত হয়ে ১৯৯৭ তে মেইল সার্ভিস এর দ্বারা ডিভিডি কুরিয়ার সাইট “নেটফ্লিক্স” চালু করলেন।
প্রথম দিকে কোম্পানি টি ভালো লাভবান হলেও, পরে যখন “ব্লক বাস্টার ভিডিও” এই নতুন কৌশল এর রহস্য তা বুঝে যাই, তখন তারাও এইরকম মেইল সার্ভিস শুরু করেন, এবং নেটফ্লিক্স এর প্রযোজোগি হয়ে ওঠে। তার জন্য ২০০৭ এ নেটফ্লিক্স ভীষণ বড় ধরণের ক্ষতি এর মুখোমুখি হয়।
তখন থেকেই তারা বুঝতে পারলো যে, ব্যাবসা এর মধ্যে নতুনা ধরণের কিছু আনতে হবে। আর তারপর থেকেই বাকিটা ইতিহাস, কারণ এরপর এরপর যখন ইন্টারনেট দ্রুত ভাবে ছড়িয়ে পড়ছিলো জনসাধারণ এর মধ্যে, নেটফ্লিক্স নিয়ে এলো ওটিটি রেভোলুশন, অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম এর মাধম্মে ভিডিও সিনেম ইত্যিদ দেখার সুযোগ করে দিলো সবাইকে.
পরে নেটফ্লিক্স চালু করলো নিজ্বস্য প্রোডাকশন কোম্পানি, যাতে আজ মানি হেইস্ট, ডার্ক, এরকম আর ও বিভিন্ন মনোৰঞ্জক ওয়েব সিরিজ এর ভিডিও আমরা দেখে থাকি। এ তো গেলো অতীত এর কিছু কথা,
২০১৭ সালের অক্টোবর মাসের হিসাব অনুযায়ী, সারাবিশ্বে নেটফ্লিক্সের গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ১০৯.২৫ মিলিয়ন, এর মধ্যে শুধু মাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই ৫২.৭৭ মিলিয়ন। তাদের প্রচেষ্টা নিত্য-নতুন কনটেন্ট তৈরী করা, অতিরিক্ত কনটেন্ট সমূহের যথাযথ অধিকার সুরক্ষন করা, এবং ১৯০ টি দেশের মধ্যে এর বৈচিত্রতার ফলে প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘমেয়াদী ঋণ নেয়া প্রতিষ্ঠান সমূহের তালিকায় তাদের ঋণের পরিমাণ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে : যা ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের হিসাব অনুযায়ী ২১.৯ বিলিয়ন ডলার, এবং যা পূর্ববর্তী একই সময়ে ১৬.৮ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে বর্তমান অবস্থায় দাঁড়িয়েছে।
এখন আসা যাক বর্তমানে, নেটফ্লিক্স এর মূল আয় হয় “সাবস্ক্রিপশন ফী” এর থেকে, কিন্তু বর্ত্যমান এ ওয়ালমার্ট , আমাজন এইসব বিভিন্ন কোম্পানি, নেটফ্লিক্স এর থেকেও কম মূল্যে সাবস্ক্রিপশন ফী দিয়ে, মনোরঞ্জন এর বিভিন্ন জিনিস এনে, দর্শক দের তাদের প্লাটফর্ম এ টেনে নিছে ,কারণ তাদের আসল উদ্যেশ্য এই প্লাটফর্ম থেকে লাভ করা নোই, তাদের আসল উদ্যেশ্য তাদের যে অন্যান্য শপিং সাইট গুলো আছে , জনসাধারণ দের সেখানে টেনে নিয়ে, সেখান থেকে তাদের লাভ করা ।
তাই আজ এই সমস্যা বিভিন্ন উঁচু স্তর এর কোম্পানি ও তাদের বিসনেস ট্যাক্টিক্স এর সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে নেটফ্লিক্স এর টলোমলো অবস্থা। তা বলে এই নয় যে কোম্পানি পুরোপুরি দেউলিয়া হয়ে যাবে, স্টক মার্কেট এর ভ্যালু আজ ওঠা-নামা করলেও। “নেটফ্লিক্স” আবার ও উঠে দাঁড়াবে।
এই ছিল আজকের আধুনিক ডিজিটাল দিনে বিভিন্ন বড় কোম্পানি গুলো যা ছোট থেকে ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠেছে , সেরকম একটা কোম্পানি “নেটফ্লিক্স” এর কিছু ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থা।